রেলওয়ে প্রযুক্তিতে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন নিয়ে এসেছে চীন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ১৭তম আধুনিক রেলওয়ে প্রদর্শনীতে ৬০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা (কিমি/ঘণ্টা) গতির একটি অত্যাধুনিক অতিপরিবাহী বৈদ্যুতিক উচ্চ-গতির ম্যাগলেভ ট্রেন উন্মোচন করা হয়।
এই ট্রেন বাণিজ্যিকভাবে পরিচালিত হলে বেইজিং এবং শাংহাইয়ের মধ্যে প্রায় ১২০০ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ২.৫ থেকে ৩ ঘণ্টা, যা বর্তমানে প্রায় ৫-৬ ঘণ্টার যাত্রাপথকে অর্ধেকে নামিয়ে আনবে।
ম্যাগলেভ ট্রেন তার নামের মধ্যেই তার কার্যকারিতা নিহিত রাখে – “ম্যাগনেটিক লেভিটেশন” বা চৌম্বকীয় উত্তোলন। এই প্রযুক্তিতে, ট্রেনটি রেল ট্র্যাকের উপরে শূন্যে ভাসে এবং শক্তিশালী বৈদ্যুতিক চুম্বকের সাহায্যে এগিয়ে যায়। এর ফলে চাকার ঘর্ষণজনিত প্রতিরোধ থাকে না, যা প্রচলিত ট্রেনের তুলনায় অনেক বেশি গতি অর্জনে সহায়তা করে। ৬০০ কিমি/ঘণ্টা গতির এই নতুন ম্যাগলেভ ট্রেনটি বিশ্বের দ্রুততম স্থলযান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চলেছে।
যদিও এই ম্যাগলেভ ট্রেনটি এখনও বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়নি, এর আত্মপ্রকাশ চীনের উচ্চ-গতির রেল প্রযুক্তিতে অগ্রগতির এক স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয়। এটি প্রমাণ করে যে চীন রেলওয়ে প্রযুক্তিতে বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। এই ধরনের উদ্ভাবন ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী পরিবহণ ব্যবস্থাকে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চীন সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বাণিজ্যিক প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কাজ চলছে। এই ম্যাগলেভ ট্রেন যখন পুরোপুরি চালু হবে, তখন এটি শুধু চীনের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থারই উন্নতি ঘটাবে না, বরং বিশ্বজুড়ে উচ্চ-গতির রেল পরিবহনের ধারণাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করবে।
সূত্র: সিএমজি