সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিলের (এনসিসি) নাম ও কাঠামোতে পরিবর্তন এনে নতুন একটি প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংশোধিত এই কাঠামোর নাম রাখা হয়েছে ‘সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি’, যেখানে আর থাকছেন না রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি।
কমিশন সূত্র জানায়, এই নতুন কাঠামোর অধীনে নিয়োগ কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার। কমিটির সদস্য হবেন—প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকার ও উচ্চকক্ষের (প্রস্তাবিত) স্পিকার, বিরোধী দলীয় নেতা, প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্য দলের একজন প্রতিনিধি, রাষ্ট্রপতির একজন প্রতিনিধি (যিনি আইন অনুযায়ী নির্ধারিত যোগ্যতাসম্পন্ন হবেন) এবং প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন কর্মকর্তা।
বুধবার সকাল ১১টার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত সংলাপে এই সংশোধিত প্রস্তাবগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি নিয়েও সংশোধিত প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
কমিশনের প্রাথমিক প্রস্তাবে রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার ও গণতন্ত্র’ উল্লেখ করা হয়েছিল। নতুন প্রস্তাবে এসবের সঙ্গে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি’ যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়, যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা হবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে সংবিধান সংস্কার কমিশন যে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিল, তাতে সদস্য হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছিল—রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার, উচ্চকক্ষের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, বিরোধী দল মনোনীত সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও উচ্চকক্ষের ডেপুটি স্পিকার এবং প্রধান বিরোধী দল ব্যতীত অন্যান্য দলগুলোর একজন প্রতিনিধি।
তবে বিএনপি এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এনসিসি প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দেয়। জামায়াতে ইসলামি রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতিকে কাউন্সিল থেকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। আবার কয়েকটি দল এনসিসির বিকল্প নাম ও কাঠামোর পক্ষে মত দেয়। এসব মতামতের ভিত্তিতেই সংশোধিত কাঠামো ও নতুন নাম চূড়ান্ত করে কমিশন। এই প্রস্তাবটিই এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করা হবে।