Site icon আজকের কাগজ

বকশীগঞ্জে সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত, ন্যায় বিচার না পাওয়ায় চরম হতাশায় পরিবার

সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

মোয়াজ্জেম হোসেন হিলারী, বকশীগঞ্জ : বকশীগঞ্জে সাংবাদিক নাদিমের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়েছে।

১৫ জুন (রবিবার) বিকালে বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এ মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়।

এ উপলক্ষে মেরুরচর দারুল উলুম কওমী মাদ্রাসায় এক স্মরণ সভায় তার আত্মার মাগফেরাত কামনায় মিলাদের আয়োজন করা হয়। স্মরণ সভায় প্রয়াত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও দ্রুত বিচার দাবিতে বক্তব্য রাখেন বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল লতিফ লায়ন, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ উল হাসান, সাবেক সভাপতি এম শাহীন আল আমীন, সাবেক সভাপতি সরকার আবদুর রাজ্জাক, সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামান রতন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মতিন রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন হিলারী, দপ্তর সম্পাদক লিয়াকত হোসেন বাবুল, সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক আলমাছ আলী ও সাদ্দাম হোসেন মুন্না ।

বক্তারা বলেন, জামালপুরের বকশীগঞ্জে বাংলা নিউজের সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকান্ডের দুই বছর অতিবাহিত হলেও ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে চরম হতাশায় তার পরিবার। দ্রুত বিচার দাবি করেছেন পরিবার ও স্থানীয় সাংবাদিকরা। এ ছাড়াও নাদিমের মৃত্যুর পর সরকারি বে-সরকারি ভাবে সহযোগীতার আশ্বাস দিলেও কোন ধরনের সহায়তা পায়নি পরিবারটি। ফলে চরম অর্থকষ্টে দিন কাটছে প্রয়াত সাংবাদিক নাদিমের পরিবারের।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৪ জুন পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে রাত আনুমানিক ১০.০০ ঘটিকার দিকে নিজ বাসায় ফেরার পথে পৌর শহরের পাটহাটি এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন গোলাম রাব্বানী নাদিম। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জামালপুর হাসপাতালে রেফার করেন। জামালপুর হাসপাতালে নেওয়া হলে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিৎিসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন বেলা ৩.০০ ঘটিকার দিকে মারা যায় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম এবং ১৬ জুন উপজেলার নিলাক্ষিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় ১৭ জুন নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ২২ জন নামীয় এবং ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বকশীগঞ্জ থানায় মামলায় দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী সাধুরপাড়া ইউপির বরখাস্তকৃত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। আলোচিত এই হত্যাকান্ডের ১৪ মাস পর ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যা মামলার চার্জশীট দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। 

যাদেরকে অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন, প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবু, মো. রাকিবিল্লাহ রাকিব, মো. রেজাউল করিম, মো.শরিফ মিয়া, মো. মনিরুজ্জামান মনির, বাদশা মিয়া, মো.শাহজালাল, মো. শফিকুল ইসলাম ও মো.তোফাজ্জল মিয়া। 

এজাহার নামীয় ২২ জনের মধ্যে ১৩ জনকে বাদ দিয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়ায় অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে পুন:তদন্তের দাবি জানান মামলার বাদী। আদালত বাদীর দাবি আমলে নিয়ে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মামলাটি র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) কে তদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে র‌্যাবের অধীনে  মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।

এ দিকে মামলার বাদী মনিরা বেগম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা আমার স্বামীকে হত্যা করেছেন। তাই ন্যায় বিচারের আশায় সরকার পতনের অপেক্ষায় ছিলাম। ফ্যাসিস্ট বিদায় হয়েছে কিন্তু বিচারতো পাচ্ছি না। ছেলে মেয়ে নিয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছি। তবুও কিছুই চাই না শুধু খুনিদের বিচার চাই।

বকশীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল লতিফ লায়ন বলেন, সাংবাদিক নাদিমের মৃত্যুতে পরিবারটির অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। সে সময় সরকারি বে-সরকারি ভাবে অনেক আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল কিন্তু কেউ পাশে দাড়ায়নি। নিহত সাংবাদিক নাদিমের মেয়ের জন্য চাকুরী এবং তার পরিবারের জন্য সরকারি ভাবে আর্থিক সহযোগীতার দাবি জানান।

Exit mobile version