Site icon আজকের কাগজ

ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করলে বিশ্বে জ্বালানি বাজারে বড় ধাক্কা আসবে: আল জাজিরার

হরমুজ প্রণালী

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা আঘাত হিসেবে তীব্র শক্তি নিয়ে হামলা শুরু করেছে ইরানও। এমন প্রেক্ষাপটে দেশটি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে— এমন ইঙ্গিত ইতোমধ্যে দিয়েছে তেহরান।

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সামুদ্রিক রুট বন্ধ হলে তার প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ নিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

রোববার (১৫ জুন) আল জাজিরা জানায়, হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক এড হির্স এ বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, ইরান যদি সত্যিই এই প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে তা আন্তর্জাতিক তেলবাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

এদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরআইএনএন জানায়, ইসরায়েলি হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালী বন্ধের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছে ইরান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য এসমাইল কসারি।

প্রণালীর গুরুত্ব তুলে ধরে এড হির্স বলেন, “এই প্রণালী দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়। অর্থাৎ, বিশ্বের মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশই হরমুজ প্রণালী দিয়ে যায়।”

তিনি আরও বলেন, “এই অঞ্চলের জন্য কোনো সহজ বিকল্প রুট নেই— বিশেষ করে সৌদি আরব, কুয়েত এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর জন্য। ফলে যদি প্রণালী দিয়ে তেল পরিবহন অর্ধেকে নেমে আসে, তাহলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১২০ মার্কিন ডলার বা তারও বেশি হতে পারে। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে প্রতিটি দেশের ওপর পড়বে।”

হির্স আরও বলেন, হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিলে সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক হামলার একটি অজুহাত হয়ে উঠতে পারে, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গিতে।

তার ভাষায়, “তেল সরবরাহ বন্ধ করা হলে সেটি সরাসরি বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর হামলা হিসেবে দেখা হবে— এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ওপরও। এতে করে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপে যেতে পারে।”

উল্লেখ্য, হরমুজ প্রণালী হলো পারস্য উপসাগরে প্রবেশের একমাত্র সমুদ্রপথ। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য সংস্থা (ইআইএ)-এর তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের মোট তেল চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ এই পথ দিয়ে পরিবাহিত হয়।

মূলত হরমুজ প্রণালী হচ্ছে ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত একটি সংকীর্ণ পানিপথ। উপসাগরীয় দেশগুলোর অধিকাংশ তেল রপ্তানি এই পথ দিয়েই সম্পন্ন হয়। এর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের তেল রপ্তানির ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছিল।

Exit mobile version