মো. হুমায়ুন কবির খোকন, পটুয়াখালী : সামুদ্রিক টাইগার চিংড়ী। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এ চিংড়ি আহরণের প্রধান মৌসুম। এ সময় চিংড়ি শিকারের ধুম পড়ে পটুয়াখালী সহ আশপাশের উপকূলীয় এলাকা গুলোতে। বঙ্গোপসাগর থেকে শিকার করা এ চিংড়ির চাহিদা রয়েছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। তাই ভালো দাম পাওয়ায় চিংড়ি শিকার থেকে শুরু করে বাছাই ও প্রক্রিয়াজাত করে কর্মসংস্থান হয়েছে উপকূলীয় অর্ধলাখ নারী ও পুরুষের।
বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী পটুয়াখালীর দূর্গম দ্বীপ চরমোন্তাজ গিয়ে দেখা যায়- বঙ্গোপসাগর থেকে টাইগার চিংড়ি শিকার করে ঘাটে নিয়ে আসছেন জেলেরা। এরপরই সেখানে নারী-পুরুষের মহাকর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে যায়। কেউ ফিশিংবোট থেকে মাছ নামান। কেউ অন্যান্য মাছের মধ্য থেকে টাইগার চিংড়ি বাছাই করে বের করছেন। কেউ বা আবার টাইগার চিংড়ির মাথা কেটে আলাদা করে রফতানির উপযোগী করছেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের বাজারে এ চিংড়ির তেমন চাহিদা না থাকলেও ইউরোপ-আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। ফলে পটুয়াখালী থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার টাইগার চিংড়ি বিদেশে রফতানি করা হয়।
এদিকে টাইগার চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতে উপকূলের হাজার হাজার নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীদের কর্মসংস্থান হওয়ায় অনেক সংসারেই সচ্ছলতা ফিরেছে।
কয়েকজন নারী কর্মী জানালেন, এসব চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণের নানা কাজ করে দিনে তাদের ৩০০-৪০০ টাকা আয় হচ্ছে।
অন্যদিকে বিদেশে রফতানিযোগ্য চিংড়ি শিল্পের প্রসারে জেলেদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
পটুয়াখালীর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কামরুল ইসলাম জানালেন, এই টাইগার চিংড়ির বেশিরভাগই বাইরে রপ্তানি হয় এবং বাংলাদেশ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে। এই চিংড়ির গুণগত মান রক্ষার জন্য জড়িত সকল পক্ষকে যথাযথ পরামর্শ দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলার জেলেরা সমুদ্র থেকে টাইগার চিংড়ী সংগ্রহ করেন। এরপর সমুদ্র লাগোয়া বিভিন্ন পয়েন্টে টাইগার চিংড়ি বিদেশে রফতানির জন্য প্রতিক্রয়াজাত করা হয়। এখান থেকে পাইকারদাররা কিনে নিয়ে যান খুলনায়। সেখান থেকে রপ্তানিকারক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিদেশে রফতানি করা হয়। আর এ চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতের সঙ্গে সংযুক্ত রয়েছে উপকূলের লক্ষাধিক মানুষ।