প্রথম সেশনে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েও দিন শেষে হাসিমুখে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ। কারণ, চতুর্থ উইকেটে শান্ত ও মুশফিকের অসাধারণ জোড়া সেঞ্চুরি ঘুরিয়ে দিয়েছে পুরো চিত্র।
গলের পয়া মাঠে আজ যেন নিজের পুরনো রূপে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। সতীর্থ শান্তর মতো তীব্র আবেগে ভাসেননি তিনি—বরং ব্যাট ও হেলমেট উঁচিয়ে, ঊর্ধ্বপানে তাকিয়ে একটি শান্ত, আত্মবিশ্বাসী হাসিই জানিয়ে দিল, সমালোচনার চাপ কাটিয়ে নিজের কাজটা করে দেখিয়েছেন তিনি।
শেষ ১৩ ইনিংসে ফিফটি না পাওয়ার হতাশা, বয়স নিয়ে ওঠা বিদায়ী আলোচনা—সবকিছুর জবাব যেন ছিল এই ইনিংসেই। এবং সেটা এসেছে প্রিয় প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে, প্রিয় মঞ্চ গলের মাঠে।
আজকের এই ইনিংসের আগে গলে খেলা দুই টেস্টে একটিতে করেছিলেন ৮৫ ও ৩৪ রান। আর এই মাঠেই একসময় বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক।
আজ পেয়েছেন নিজের ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের ইতিহাসে তার চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি কেবল মুমিনুল হকের (১৩)। দিনশেষে তিনি অপরাজিত ১০৫ রানে, ইনিংসটি গড়েছেন ৫টি চারের মাধ্যমে। শেষবার সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন গত আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে, তখন করেছিলেন ১৯১ রান।
অন্যদিকে অধিনায়ক শান্ত আরও একবার প্রমাণ করলেন নিজের ধারাবাহিকতা। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। ১৩৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও একটি ছক্কার মার।
তবে দিনের শুরুটা ছিল মোটেও আশাজনক নয়। মাত্র ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বোলাররা তখন প্রথম সেশনের শুরুতেই খেলায় ছড়ি ঘোরাতে শুরু করে দিয়েছিলেন।
কিন্তু সেখান থেকেই হাল ধরেন শান্ত ও মুশফিক। চতুর্থ উইকেটে গড়েন ২৪৭ রানের অপরাজিত জুটি। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে এনে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেন ৩ উইকেটে ২৯২ রান নিয়ে।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে আজ সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন অভিষিক্ত স্পিনার থারিন্দু রত্নায়াকে। তিনি নিয়েছেন ২ উইকেট।
শান্ত ও মুশফিকের এই অভিজ্ঞতা-নির্ভর জুটি যেন প্রথম দিনের ম্যাচের গল্পই বদলে দিয়েছে। দ্বিতীয় দিনে তারা আরও কতদূর এগোতে পারেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
একটা বিষয় নিশ্চিত—গলে আজ মুশফিকের সেই শান্ত হাসিটাই যেন বাংলাদেশের সমালোচকদের মুখে এক নিঃশব্দ জবাব!