Site icon আজকের কাগজ

সম্পদ আছে, কিন্তু হাতে নগদ টাকা নেই—এমন ব্যক্তির কোরবানির বিধান–

কোরবানির পশুর হাট

কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে সহজ বিশ্লেষণ

ইসলামী বিষয়ক ডেস্ক:
আসন্ন ঈদুল আজহাকে ঘিরে অনেক মুসলমানই কোরবানি নিয়ে নানা প্রশ্নে পড়েন। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো: কোনো ব্যক্তির সম্পদ আছে, কিন্তু তার হাতে নগদ টাকা নেই—তাহলে তার জন্য কোরবানি করার বিধান কী হবে? কুরআন, সহিহ হাদিস এবং ইসলামি ফিকহের আলোকেই এর সঠিক ব্যাখ্যা জানা আমাদের সকলের জন্য জরুরি।

প্রতি বছর জিলহজ মাসে মুসলিম উম্মাহ ঈদুল আজহা পালন করে। এই উৎসবের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা, যা ইসলামের অন্যতম সুন্নত ইবাদত। মহান আল্লাহ বলেন—

“তোমরা তোমাদের প্রভুর উদ্দেশ্যে সালাত কায়েম করো ও কোরবানি করো।” (সূরা কাওসার, আয়াত ২)

কোরবানির মূল শর্তগুলো কী? ইসলামি শরিয়তের দৃষ্টিতে, কোরবানি ওয়াজিব (অত্যাবশ্যক) হয় সেই মুসলমানের ওপর, যিনি— ১. আকিল-বালেগ (বয়ঃপ্রাপ্ত ও সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী), ২. মুকিম (মুসাফির নন), ৩. নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক।

 হাতে নগদ টাকা নেই, কিন্তু সম্পদ আছে—তাহলে কোরবানির বিষয়ে কি করনীয়। এই পরিস্থিতিতে ইসলামি চিন্তাবিদ ও ফিকহ বিশেষজ্ঞরা বলছেন: যদি কারও কাছে নগদ টাকা না-ও থাকে, কিন্তু তার কাছে মূল্যবান সম্পদ থাকে (যেমন: সোনা, জমি, ব্যবসার পণ্য ইত্যাদি), তাহলে সেই ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ ধনসম্পদের মালিক হিসেবে বিবেচিত হবেন। তাই কোরবানি করা উচিৎ হবে কেন না,  রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:“যে ব্যক্তি কোরবানি করার সামর্থ্য রাখে, অথচ কোরবানি করে না—সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩১২৩; হাসান)। এই হাদিসের ব্যাখ্যায় অনেক আলেম বলেন—সামর্থ্য বলতে শুধু হাতে নগদ থাকা বোঝায় না; বরং সম্পদের মালিক হওয়াও যথেষ্ট।

শুধু মাত্র ইমাম আবু হানিফা (রহ.)-এর মতে, কোরবানি ওয়াজিব, যদি কেউ জাকাতের নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন। এ ক্ষেত্রে নগদ টাকা না থাকলেও গহনা, অলংকার, বা বিক্রয়যোগ্য সম্পদ থাকলে কোরবানি ওয়াজিব হবে। আবার অন্যান্য ইমামদের মতে এটি একটি সুন্নাহ ইবাদাত।

ইসলামে ইবাদত সহজ, কিন্তু উদাসীনতা নয়। তাই যদি আপনি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তবে সাময়িক অসুবিধা থাকলেও কোরবানির ইবাদত থেকে নিজেকে বিরত রাখা উচিত নয়।

FacebookMastodonEmailShare
Exit mobile version