ভারতের কলকাতা ও দিল্লি এখন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের পলাতক নেতা, মন্ত্রী ও দলবাজ কর্মকর্তাদের বড় আস্তানা হয়ে উঠেছে। ভারতের বাইরে দুবাই, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে পালিয়ে গেছেন অনেকে।
শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী ও বড় নেতাদের বেশিরভাগই গত বছরের ৫ আগস্টের পর পালিয়ে গেছেন। শেখ পরিবারের কয়েকজন পালিয়েছেন ৫ আগস্টের আগে। সর্বশেষ সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ চিকিৎসার কথা বলে থাইল্যান্ড গেলেও তার গন্তব্যস্থল হবে ভারতের দিল্লি। জানা গেছে, সেখানে তিনি পুরো সময় অবস্থান করবেন। পতিত শেখ হাসিনাও বর্তমানে দিল্লিতে অবস্থান করছেন।
বড় নেতাদের মধ্যে এখন শুধু সাবেক স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরীই রয়ে গেছেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন ৫ আগস্ট তিনি জাতীয় সংসদ ভবনের বাংকারে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকে সেনাবাহিনী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যায়। এখনো তিনি সেনানিবাসে অবস্থান করছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল আহমেদের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ হওয়ায় তার বিষয়টি আলোচনায় নেই।
গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন আমির হোসেন আমু, সালমান এফ রহমান, ফারুক খান, আনিসুল হক, ড. আবদুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, ডা. দীপু মনি, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল মামুন, সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউল আহসানসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য।
জুলাই বিপ্লবের পর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী-নেতাসহ সুবিধাভোগী ৬২৬ জনকে প্রাণরক্ষায় সেনানিবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৬১৫ জন সেনানিবাস ত্যাগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারত যান। এছাড়া সিলেট, চট্টগ্রাম, আখাউড়া, লালমনিরহাট, ফেনী, সাতক্ষীরা ও ময়মনসিংহের ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে অনেকেই পালিয়েছেন। বেনাপোল দিয়ে দুই শতাধিক নেতা কলকাতায় অবস্থান নিয়েছেন।
কলকাতা পুলিশের তালিকায় রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দুই শতাধিক নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ আরও অনেকে।
শেখ হাসিনার আত্মীয়দের অনেকেই সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে গেছেন। শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারত গেছেন, বর্তমানে দিল্লি ও কলকাতায় অবস্থান করছেন। শেখ ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, শেখ হেলাল, শেখ সালাহ উদ্দিন, এবং তন্ময় ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন।
সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ইস্তান্বুলে এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব দিল্লিতে রয়েছেন। মুজিব শেখ হাসিনার সঙ্গে সমন্বয় করছেন বলে জানা গেছে।