চীন ২০২৫ সালের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে জোরাল লক্ষ্যভিত্তিক ম্যাক্রো নীতিমালার মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অযৌক্তিক শুল্ক নীতির ধাক্কা সামাল দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন চায়না গ্যালাক্সি সিকিউরিটিজের প্রধান অর্থনীতিবিদ চাং চুন।
চায়না ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চাং বলেন, “২০২৫ সালের অর্থনৈতিক গতি ইউটার্ন নিতে পারে—দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রান্তিকে বাণিজ্য সংকটজনিত ধীরগতি দেখা গেলেও, এপ্রিলের শেষদিকে কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠকের পর গৃহীত উদ্দীপনামূলক পদক্ষেপে প্রবৃদ্ধি আবার ঘুরে দাঁড়াবে।”
তিনি বলেন, ‘যদি বলিষ্ঠ ম্যাক্রো নীতিমালা চালু থাকে এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে বছরে প্রায় ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব।’
পার্টি নেতাদের ওই বৈঠকে মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির সম্ভাব্য নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় অগ্রাধিকারভিত্তিক এবং কার্যকর পদক্ষেপের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।
চাং বলেন, আগামীতে চীন প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও জনগণের প্রত্যাশা স্থিতিশীল করতে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির মাধ্যমে শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব মোকাবেলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে। এর অংশ হিসেবে মার্চে ঘোষিত সরকারি বন্ড দ্রুত ছাড় ও কাজে লাগানো হবে।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর ১.৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের ২১ ধাপে দীর্ঘমেয়াদি বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হবে এপ্রিল ২৪ থেকে অক্টোবর ১০-এর মধ্যে। চাং মনে করেন, এই ধরনের বন্ড ইস্যুর আরও সুযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রবীণ সেবা এবং জন্মহার বৃদ্ধির মতো খাতে রাজস্ব ব্যয়ও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পিপলস ব্যাংক অব চায়না সাতদিনের রিভার্স রেপোর হার ১০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ১.৪ শতাংশ করেছে। পাশাপাশি রিজার্ভ রেশিও ০.৫ শতাংশ কমিয়ে ১ ট্রিলিয়ন ইউয়ান নতুন তরল অর্থনীতি সঞ্চার করবে — যা কার্যকর হবে ১৫ মে থেকে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ লুইস লু বলেন, ‘শুধু সুদের হার কমানো নয়, বরং বড় পরিসরের এই তারল্য ছাড় সরকারের রাজস্ব-উদ্দীপনা বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়ক ভূমিকা নিশ্চিত করবে।’
পরিশেষে চাং বলেন, ‘মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির ক্ষণস্থায়ী ধাক্কা চীনের উৎপাদন উন্নয়ন ও রূপান্তরের জন্য একটি সুযোগও বটে।’
সূত্র: সিএমজি