হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রতি উড়োজাহাজে পাখির আঘাতের (বার্ড হিট) ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। বিমানবন্দর এলাকাজুড়ে জলাশয়, উচ্ছিষ্ট খাবার এবং রানওয়ের আশপাশের সবুজ ঘাস পাখিদের আকৃষ্ট করছে, যা উড়োজাহাজ চলাচলে গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
শীতকালে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিমানবন্দরে পাখি তাড়ানোর জন্য বার্ড শ্যুটার নিযুক্ত থাকলেও পাখিদের উপস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। এতে পাইলট ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
সাম্প্রতিক বার্ড হিটের ঘটনা
গত চার বছরে শাহজালালসহ দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে পাখির আঘাতে দেশি-বিদেশি সাতটি উড়োজাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১১ আগস্ট সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বার্ড হিটের কারণে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ে। একই দিন শাহজালালে পৃথক দুটি বার্ড হিটের ঘটনা ঘটে। ব্যাংককগামী ফ্লাইটের পেছনের চাকা ফেটে যাত্রীদের আতঙ্কিত হতে হয়েছে। ফ্লাই দুবাইয়ের একটি ফ্লাইটেও একই ঘটনা ঘটে।
বার্ড হিটের প্রভাব
বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের মতে, উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে গেলে ইঞ্জিনের ফ্যান ও ব্লেড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। পাইলটদের মানসিক চাপও বেড়ে যায়।
পাখি তাড়ানোর উদ্যোগ
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম জানান, পাখি তাড়াতে সরাসরি বার্ড কন্ট্রোল, সাউন্ড রিপেলিং, লেজার গান এবং সাউন্ড ডিটেকশনের মতো পদ্ধতি ব্যবহৃত হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের অংশ হিসেবে পাখির খাবারের উৎস সরিয়ে নেওয়া এবং জলাশয় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা চলছে।
প্রাসঙ্গিক তথ্য
দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাখির সঙ্গে ধাক্কা লাগার কারণে রবিবার একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে ১৮১ যাত্রীর মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। খারাপ আবহাওয়া এবং পাখির আঘাতকেই এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
বার্ড হিটের ক্রমবর্ধমান প্রবণতা উড়োজাহাজ চলাচলে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।