ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল সিনেমার পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন বরাবরই। এক সময় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ডিপজল। তবে মনোনয়ন না পাওয়ায় এবার তিনি বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির ব্যানারে রাজনীতির মাঠে আলোচনায় আসেন।
বিতর্কিত পোস্টার
মহান বিজয় দিবসে ডিপজল সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে একটি পোস্টার প্রকাশ করেন। সেই পোস্টারেই মূলত বিতর্কের সূত্রপাত। পোস্টারটি রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ডিজাইন করা হয়েছে, যেখানে বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা— জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে।
পোস্টারের ক্যাপশনে ডিপজল লিখেছেন:
‘১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। যাদের মহান আত্মত্যাগে আমাদের এই স্বাধীনতা, সেই সব বীর শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। লাখো শহিদের রক্তে লেখা, বিজয়ের এই ইতিহাস, মুক্তির বার্তা নিয়ে বারবার ফিরে আসুক ডিসেম্বর মাস।’
এতে শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়। কারণ, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার বিএনপির ব্যানারে রাজনীতিতে সক্রিয়তা দেখাচ্ছেন তিনি।
আ.লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ এবং ভূমিকা
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ডিপজল। এরপর ২০২১ সালে ঢাকা-১৪ আসনের উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৎপর ছিলেন তিনি।
এর আগে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে সরব ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডিপজলের এ রূপান্তর রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
মামলা এবং সমালোচনা
গত আগস্টে সরকার পতনের পর ডিপজলের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। অনেকে মনে করছেন, মামলা থেকে রেহাই পেতেই তিনি বিএনপির দিকে ঝুঁকেছেন এবং ভোল পাল্টিয়েছেন।
দল বদলের পুরনো ইতিহাস
ডিপজলের দল বদলের ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুযায়ী অবস্থান বদলেছেন।
- ১৯৯৪ সালে বিএনপির সমর্থনে ঢাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন ডিপজল।
- পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নিজেকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলে দাবি করেন তিনি।
এবারও পোস্টারে বিএনপির নেতাদের ছবি এবং বার্তা প্রকাশ করে তিনি রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন।